দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া, ঘন ঘোর অমানিশা, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, ঝড়, অবিরাম বৃষ্টি, ধমকা হাওয়া, ঝির-ঝির বৃষ্টির সাথে প্রচন্ড বেগে প্রবাহমান বাতাস। ফলে হাওরের জলরাশিতে সৃষ্টি হয় উথাল চাঁন কপাইল্যা ঢেউ। এ পরিস্থিতিকে গাদলা দিন বলে। বাদলা দিন হতেই হয়ত ঘাদলা দিন এর উদ্ভব হয়েছে। সৃষ্ট বড় বড় এ ঢেউকে আফাল বলে। যা আছরে পরে দ্বীপসম গ্রামে, আঘাত করে একের পর এক। স্রেুাতের অনুকুলে উত্তর দিকের বাতাস বড়ই ভয়াবহ। এতে ঢেউ এর ভাঙ্গণের গতি. ক্ষমতা ও তীব্রতা অনেক বেশী থাকে। আফাল শব্দটি বিশ্লেষণ করলেই এর ভয়াবহতা, ধ্বংস ক্ষমতা বুঝা যায়। আ মানে আপদ, ফা মানে ফাঁড়া এবং ল মানে লন্ডভন্ড। আফাল এর তাফালিং বিপদ ঢেকে আনে, সব কিছু লন্ড-ভন্ড করে দেয়।
দুর্ভোগে হাওরবাসি
অসংগঠিত হাওরবাসি ন্যায় সংগত অধিকার হতে বঞ্চিত; বহুমূখী সমস্যা, ভোগান্তি ও প্রতারণা তাঁদের নিত্য সঙ্গী । শুধু ধান, মৎস্য ও পাথর সম্পদ দিয়ে হাওর জাতীয় অর্থনীতিতে যে যোগান দেয় তার কিয়দাংশ হাওর উন্নয়নে ব্যবহার করলে এতো দিনে কোন সমস্যা থাকার কথা নয়। অথচ বাঁধ ভেঙ্গে কৃষকদের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও ধানক্ষেত ডুবে আছে পানির নিচে। পানির তোড়ে ধসে গেছে বিভিন্ন স্থানে তৈরি বেড়িবাঁধ। ক্ষেত্রবিশেষে কৃষকের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি বাঁধেও শেষ রক্ষা হয়নি। বানের ঘোলাজল আর চোখের নোনাজল মিলেমিশে একাকার।অনেকে দাদন নেয়া টাকা কীভাবে শোধ করবেন তা নিয়ে গভীর হতাশায় ভোগেন।
হাওর অঞ্চলের শিক্ষা
বৈরী আবহওয়া ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রায়ই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পরে। শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে ক্ষুধার তাড়নায় পলিয়ে যায়। অনেক বিদ্যালয় প্রঙ্গণে খেলার মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা নিরুৎসাহিত হয়।এ এলাকার মানুষ দরিদ্র থাকায় শিশুদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে চায়না। অনেক পিতা- মাতা সন্তানদেরকে গৃহস্থালি কিংবা সংসারের অন্যান্য কাজে লাগিয়ে দেয়। এমন কি ফসলের মৌসুমে ছাত্র-ছাত্রী পুরোপুরই ফসল তোলার কাজে জড়িয়ে পরে। এই অনিয়মিত অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পরে এবং ঝরে পরে অনেকেই। শিক্ষক ও শ্রেণী কক্ষের স্বল্পতার কারণে উন্নত পরিবেশে শিক্ষাদান সম্ভব হয়না। শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য ও উপবৃত্তির পরিমান বৃদ্ধি করতে হবে এবং বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে দারিদ্রতা হৃাস করেত হবে এবং পিতা-মাতাকে সচেতন করতে হবে। নতুন বিদ্যালয় ও শিক্ষক নিয়োগ এবং শ্রেণী কক্ষসহ প্রয়োজনীয় সকল সুবিধা বর্ধিত করতে হবে। বর্ষা এলেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে লিপ্ত হয় কর্ম চাঞ্চল্যহীন হাওরবাসি মানুষ। বর্ষাকালে হাওর এলাকার প্রতিটি বাড়ি জলবন্দি হয়ে পড়ে। কিন্তু আফাল তাদের ঘর বন্ধি করে রাখে। আফালের ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ হয়ে পরে। অঘোষিতভাবে স্কুল, হাট বাজার, যোগাযোগ বন্দ্ব থাকে।
৭নং এলংজুরী ইউনিয়নে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ নং ওর্য়াড ভুক্ত গ্রাম থেকে বর্ষা কালে নৌকা যোগে এবং হেমন্ত কালে পায়ে হেটে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র যাতায়ত করা যায়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস